শেরপুরের নকলা উপজেলায় কম্বাইন হার্ভেস্টারের মাধ্যমে সমলয়ে আবাদ করা বোর ধান কর্তন কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়েছে। ৫ মে বুধবার সকালে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে বানেশ্বর্দী ইউনিয়নের কৃষক শামছুজ্জামান জুয়েলের সুপার হাইব্রিড জাতের ধানের জমি কর্তনের মধ্যদিয়ে কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়।
এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ মো. বোরহান উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান, শেরপুর খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. গোলাম রাসুল, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস, কৃষি প্রকৌশলী শিবানী রানী নাথ, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বত, নকলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু, যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনসহ স্থানীয় কৃষক-কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৫০ একর জমিতে সমলয়ে বোর ধানের আবাদ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস জানান, কম্বাইন হার্ভেস্টারের সাহায্যে একসঙ্গে ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দি করা সম্ভব। ফলে কৃষকের উৎপাদন খরচ ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কমেছে। অধিক ফলন ও উৎপাদন খরচ কমানোর লক্ষ্যে কৃষি খামার যান্ত্রিকরণ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশ ব্যাপী উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষি যন্ত্রপাতিতে উন্নয়ন সহায়তা বাস্তবায়ন ও মনিটরিং সেল-এর তত্তাবধায়নে পরিচালন বাজেটের আওয়াতায় উন্নয়ন সহায়তার লক্ষ্যে সরকারি ৫০ শতাংশ ভূর্তুকি মূল্যে উপজেলা পর্যায়ের কৃষকদের মাঝে কম্বাইন হার্ভেস্টার প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, আগ্রহের সাথে আবেদন করা কৃষকদের মধ্য থেকে এ বছর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ৬টি কম্বাইন হার্ভেস্টার মেশিনের চাহিদা দফতরে পাঠানো হয়েছিলো। কিন্তু ৩টি বরাদ্দ পাওয়া গেছে। প্রতিটি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনের বাজার মূল্য ২৮ লাখ থেকে ৩০ লাখ টাকা। প্রতিটি কম্বাইন হার্ভেস্টার মেশিনে সরকার সর্বোচ্চ ১৪ লাখ টাকা ভর্তুকি প্রদান করেছে। এ যন্ত্র দিয়ে একই সঙ্গে দৈনিক প্রায় ৮ একর থেকে ১০ একর জমির ধান ও গম কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দি করা যায়। ফলে কৃষকের উৎপাদন খরচ ও সময় অনেক কম লাগে। অল্প সময়ে সহজেই ধান কাটার এই প্রযুক্তি হাতের নাগালে পেয়ে কৃষক-কৃষাণীরা খুব খুশি।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান বলেন, কৃষির সকল বিষয়ে খামার যান্ত্রিকরণ এখন সময়ের দাবি। সরকার খামার যান্ত্রিকরণ করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। দ্রুত আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করে তা ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশকেও এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখতে হবে। এবিষয়ে কৃষকসহ জনগণকে সচেতন করতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, দেশের জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে কমছে কৃষিজমি। তাই উৎপাদন খরচ কমিয়ে অধিক ফলনের জন্য কৃষিজমিতে উন্নত প্রযুুক্তির ব্যবহার জরুরি। এতে জমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতের পাশাপাশি লাভবান হবেন কৃষক।