শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্থানীয় এক মসজিদের ইমামকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৪ এপ্রিল শনিবার সকালে উপজেলার বারোমারি বাজারে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে।
অভিযোগকারী ব্যক্তি উত্তর আন্ধারুপাড়া বাইতুল মামুর শান্তিময় মসজিদের ইমাম ও খতিব মো. সাইফুল ইসলাম (২৫)। তিনি উত্তর আন্ধারুপাড়া গ্রামের জহুর আলীর ছেলে।
ইউপি চেয়ারম্যান বারোমারি বাজারে তাঁর কার্যালয়ে শনিবার সকাল ১০টার দিকে সালিস-বৈঠক ডাকেন। সেখানে ইমাম সাইফুলকে মারধরের ভয় দেখিয়ে তাবিজকবজ করার কথা স্বীকার করতে বলেন।
ওই ইমামের ভাষ্যমতে, বেশ কিছুদিন ধরে একই এলাকার এক যুবক তাঁর মামাতো বোনকে বশে আনতে ইমামের কাছে আসছেন, সে ইমামের কাছ থেকে বশীকরণ তাবিজকবজ নিতে চান। কিন্তু ইমাম সাইফুল তাবিজকবজ জানেন না বলে যুবককে সাফ জানিয়ে দেন। এর পরেও ওই যুবক বশীকরণ তাবিজকবজের জন্য ইমামকে প্রতিনিয়ত বিরক্ত করতে থাকেন।
এমন ঘটনা চলাস্থায় সম্প্রতি ওই যুবকের মামাতো বোন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর মেয়ের পরিবার সন্দেহ করতে থাকে, এ ইমামের তাবিজকবজের কারণেই মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ সন্দেহের জেড়ে মেয়েটির বাবা স্থানীয় পোড়াগাঁও ইউপির চেয়ারম্যান মো. আজাদ মিয়ার কাছে অভিযোগ করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান বারোমারি বাজারে তাঁর কার্যালয়ে শনিবার সকাল ১০টার দিকে এবিষয়ে সালিস-বৈঠক ডাকেন। সেখানে ইমাম সাইফুলকে মারধরের ভয় দেখিয়ে তাবিজকবজ করার কথা স্বীকার করতে বলেন। ইমাম অস্বীকার করলে তাঁকে একটি কক্ষে নিয়ে চেয়ারম্যান চড়-থাপ্পড় মারেন। তাছাড়া চেয়ারম্যান ইমামকে দেয়ালে ঠেকিয়ে তার গলা চেপে ধরেন বলেও অভিযোগ করেন ইমাম সাইফুল ইসলাম।
ইমাম বলেন, আমাকে তাবিজকবজের জন্য দায়ী করে চেয়ারম্যান সাহেব সালিসে ডেকে সবার সামনে গালিগালাজ করেছেন। পরে অন্য এক কক্ষে নিয়ে গিয়ে আমাকে গালে-মুখে কয়েকটি থাপ্পড় মেরেছেন। আমি কোনো তাবিজকবজ করি নাই। আমাকে চেয়ারম্যান অন্যায়ভাবে অপমান অপদস্ত করেছেন এবং শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করেছেন। অভিযোগকারী ইমাম সাইফুল ইসলাম এর সুষ্ঠু বিচার কামনা করেছেন।
সালিস থেকে ফিরে সাইফুল ইসলাম বিষয়টি এলাকাবাসীকে অবগত করেন। পরে এলাকাবাসী ইমামের মারধরের ঘটনার বিচার দাবি করেন। তাঁকে নিয়ে এলাকাবাসী থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে।