কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) শেরপুরের উপপরিচালক (টিসি) কৃষিবিদ মো. সাজেদুর রহমানের বদলি জনিত বিদায় ও সদ্য যোগদানকৃত উপপরিচালক (টিসি) কৃষিবিদ মো. খলিলুর রহমানকে বরণ করে তাদের দুইজনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। জেলা সদরের শেরীঘাট বিএডিসি মিলনায়তনে শেরপুর বিএডিসি’র চুক্তিবদ্ধ আলু চাষীদের আয়োজনে এ বিদায় ও বরণ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্ত বিএডিসি’র চুক্তিবদ্ধ আলু চাষী ওসমান গণির সভাপতিত্বে বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠানে সদ্য বদলী হওয়া বিএডিসি শেরপুরের উপপরিচালক (টিসি) কৃষিবিদ মো. সাজেদুর রহমান ও সদ্য যোগদানকৃত উপপরিচালক (টিসি) কৃষিবিদ মো. খলিলুর রহমানসহ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএডিসি নকলা হিমাগারের উপ-পরিচালক (টিসি) মো. রফিকুল ইসলাম, শেরপুরের সহকারী পরিচালক ফেরদৌস আহমেদ, নকলার উপ-সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, সদ্য বিদায়ী বিএডিসি শেরপুরের উপপরিচালক (টিসি) কৃষিবিদ মো. সাজেদুর রহমানের সহধর্মীনি শামছুন নাহার, শেরপুর ও নকলা বিএডিসি অফিসে কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারী, শেরপুর বিএডিসি’র চুক্তিবদ্ধ আলু চাষীরা উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিবিদ মো. সাজেদুর রহমান শেরপুর জেলায় এক যুগেরও বেশি সময়কাল (১৪ বছর) কর্মজীবন শেষে তাকে বিএডিসির সদর দপ্তর (কৃষি ভবন) ঢাকায় উপ-ব্যবস্থাপক (এএসসি) হিসেবে পদায়না করা হয়েছে। কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) শেরপুরের উপপরিচালক (টিসি) হিসেবে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন উপপরিচালক (টিসি) কৃষিবিদ মো. খলিলুর রহমান।
কৃষিবিদ মো. সাজেদুর রহমান বিদায় সংবর্ধনা নিয়ে নতুন কর্মস্থলে পৌঁছে শেরপুর জেলায় তাঁর কর্মজীবনের কিছু স্মৃতিময় লেখা ফেইসবুকে প্রকাশ করেছেন। নিচে তাঁর আবেগময় লেখাটুকু হুবহু তুলে দেওয়া হলো।
স্মৃতিময় শেরপুর জেলা–
প্রায় ২২ বছর বিএডিসির চাকরি জীবনে শেরপুর জেলায় ১৪ বছর কর্মকাল শেষে বিদায়। নতুন কর্মস্থল উপ ব্যবস্থাপক (এএসসি), বিএডিসি, কৃষি ভবন (সদর দপ্তর), ঢাকা। শেরপুর জেলায় প্রথম মেয়াদে ৯/৪/২০০২ থেকে ৩১/৫/২০১০ ইং পর্যন্ত নকলা উপজেলায় মোট ৮ বছর ২ মাস সহকারী পরিচালক ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক হিসেবে। দ্বিতীয় মেয়াদে ১৩/৫/২০১৫ থেকে ২৪/২/২০২১ইং পর্যন্ত মোট ৫ বছর ১০ মাস উপপরিচালক হিসেবে শেরপুর সদরে। দুই মেয়াদে সর্বমোট ১৪ বছর চাকরি কাল পার করেছি শেরপুর জেলায়। উল্লেখ যে, দুই মেয়াদেই অনেক তদবির করে আমাকে শেরপুর থেকে বদলি হতে হয়েছে।
আমার গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলায় ছাইকোলা গ্রামে। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই মূলত এই অঞ্চলে আগমন। মাঝেমধ্যে ময়মনসিংহ অঞ্চল ছাড়লেও আবারও আসতে হয়েছে। এবার শেরপুর ছাড়ার পরও আবার আসতে হবে কিনা সেটা হয়ত সময়ই বলে দিবে।
যাইহোক শেরপুর জেলায় অবস্থানকালে অনেক স্মৃতি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সবচেয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবে বীজ উৎপাদন এর সাথে জড়িত চুক্তিবদ্ধ চাষী ভাইদের কথা ও কাজ। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি শেষ মুহূর্তে আমাকে এত বড় একটি বিদায় সংবর্ধনা দেওয়ায়। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি মহান জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব আতিউর রহমান আতিক স্যার ও কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা ভাইয়ের প্রতি যাঁরা বিধি মোতাবেক আমার অফিস পরিচালনায় সহায়তা করেছেন। আরও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি শেরপুর জেলা প্রশাসক জনাব আনার কলি মাহবুব স্যারের প্রতি; তিনি আমাকে করোনা কালীন সময়েও বিদায়কালে অফিসে ডেকে সম্মানিত করেছেন। অফিস পরিচালনায় সহায়তা করার ক্ষেত্রে তাঁর পরামর্শ মূলক অবদান কখনও ভুলার নয়। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সাবেক দুইজন জেলা প্রশাসক জনাব পারভেজ রহিম স্যার ও ড. মল্লিক আনোয়ার স্যার-এর প্রতি, তাদের সময়কালে আমার অফিস পরিচালনায় সহায়তা প্রদান করার জন্য। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার অফিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি। শেরপুর জেলার জন্য সবসময়ই ভালো কিছু করার চেষ্টা করেছি; জানিনা কতটুকু সফল হয়েছি, বা পেরেছি কিনা, তবে আমার চেষ্টায় কোন সময় কোন প্রকার ত্রুটি ছিলো না। তবে শেরপুর এর জন্য আরও কিছু করার সুযোগ আমার আছে এবং তা করে যাবো। প্রিয় শেরপুরবাসীর প্রতি রইলো শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।