একুশ এলেই বাঙালির মনে জেগে ওঠে চেতনা, জাগে ভাষা শহীদদের ত্যাগের কথা। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভের পর থেকেই যথাযোগ্য মর্যাদায় গ্রামান্তরে পালিত হয়ে আসছে এ দিবসটি।
এর অংশ হিসেবে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজ মাঠের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, অন্তত ১১৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১১ টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩টি কলেজ চত্বরে স্থাপিত শহীদ বেদীতে পুষ্পাঞ্জলী অর্পন করা হয়।
তবে বানেশ্বরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা, বানেশ্বরদী উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বানেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের যৌথ মাঠে নবনির্মিত শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে বায়ান্নার ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের লক্ষে ফুল হাতে স্থানীয় আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার উপস্থিতি ছিলো লক্ষনীয়। তাদের সকলের কণ্ঠে শুনা যায় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ এ ঐতিহাসিক গানটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রথমে বানেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. মাজহারুল আনোয়ার মহব্বতের নেতৃত্বে সকল সদস্যসহ অন্যান্যরা কর্মচারীরা নবনির্মিত শহীদ বেদীতে পুষ্পাঞ্জলী অর্পন করেন। পরে পর্যায়ক্রমে বানেশ্বরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওরানা মো. শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে সকল শিক্ষক- শিক্ষার্থী, বানেশ্বরদী উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজারুল ইসলাম ফিরোজের নেতৃত্বে সকল শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা পুষ্পাঞ্জলী অর্পন করেন। অতপর বানেশ্বরদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শরীফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদের নেতৃত্বে ইউনিয়ন ও বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা এ শহীদ বেদীতে পুষ্পাঞ্জলী অর্পন করেন। এরপরেই শুরু হয় যুবক থেকে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা ও প্রগতিশীল সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিককর্মী, সমাজকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণ পুস্পস্তবক অর্পণ। তারা হৃদয়ের গভীর থেকে বিনম্্র শ্রদ্ধা জানান মাতৃভূমির জন্য প্রাণ উৎসর্গ করা বীর সন্তানদের প্রতি। এদের মধ্যে স্কুল ও মাদরাসায় পড়ুয়া ছোট শিশুদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, নকলা উপজেলায় ১১৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়াও ৭১ টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৪ টি কেজি স্কুল, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গ্রাম উন্নয়ন কর্ম কর্তৃক পরিচালিত ৬টি, জার্মানের অর্থায়নে পরিচালিত মাটি সংগঠনের ৫টি, কারিতাস পরিচালিত ৪টি, ব্র্যাক পরিচালিত ৩টি বিদ্যালয় রয়েছে। তাছাড়া এমপিও ভুক্ত ৩০টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২০ টি সংযুক্ত মাদ্রাসা ও ৩টি কলেজ রয়েছে এ উপজেলায়। এসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, ১১টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ও ২টি মাদরাসাতে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে। কয়েকটিতে নির্মানাধীন থাকলেও মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ মাদরাসা গুলোতে শহীদ মিনার নির্মানে আজপর্যন্ত কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে।