শেরপুর জেলার নকলায় একুশের প্রথম প্রহরে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ভাষা সৈনিকদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। রাত ১২টা ১ মিনিট। অমর একুশের প্রথম প্রহর। ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় শহীদ মিনার। গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করা হয় বায়ান্নের ভাষা শহীদদের। ফুল হাতে ঢল নামে সর্বস্তর জনতার।
নকলা সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজ চত্তরের শহীদ মিনারে প্রথমে শহীদ ভাষা সৈনিকদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমানের নেতৃত্বে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আহাম্মেদসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর প্রধান, উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ মো. বোরহান উদ্দিনের নেতৃত্বে ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সারোয়ার আলম তালুকদারসহ অন্যান্যরা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহর নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান লিটনের নেতৃত্বে নবনির্বাচিন সকল কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরবৃন্দ, নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে হাসপাতালে কর্মরত অন্যান্যরা, নকলা থানার তদন্ত ওসি আবুল হাসিমের নেতৃত্বে নকলা থানার পুলিশ সদস্যবৃন্দ।
পরে পর্যায়ক্রমে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম সোহেলের নেতৃত্বে যুগ্ম আহ্বায়ক এফ.এম কামরুল আলম রঞ্জু ও রেজাউল হক হীরাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলতাব আলীর নেতৃত্বে অন্যান্যরা, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ নকলা উপজেলা শাখার সভাপতি মজিবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বিদ্যুতের নেতৃত্বে অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, উপজেলা কৃষকলীগের আহবায়ক আলমগীর আজাদের নেতৃত্বে অন্যান্যরা, নকলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুকের নেতৃত্বে, নকলা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি বিদ্যা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক ফকির মোহাম্মদ রেজাউল করিমের নেতৃত্বে ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী অটিজম বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনের নেতৃত্বে অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দসহ নকলা উপজেলা থেকে স্থান করে নেওয়া জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিল, জাতীয় শ্রমিক লীগ নকলা উপজেলা শাখা, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, বিদ্যুৎ কারিগরি কল্যাণ সমিতি, রং মিশ্রি কল্যাণ সমিতিসহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, রেডক্রিসেন্ট নকলা উপজেলা শাখা, বিভিন্ন ইউনিয়ন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং উপজেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং বিভিন্ন পেশাশ্রেণীর জনগন একে একে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে শহীদ বেদীতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
সর্বস্তরের মানুষের ফুলেল শ্রদ্ধায় শহীদ মিনারের বেদী ফুলে ঢেকে যায়। বৃদ্ধ থেকে যুবক, পৌঢ় থেকে শিশু, প্রগতিশীল সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিককর্মী, রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণ পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে হৃদয়ের গভীর থেকে বিনম্্র শ্রদ্ধা জানান মাতৃভূমির জন্য প্রাণ উৎসর্গ করা বীর সন্তানদের প্রতি। সরজমিনে দেখা গেছে শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসা মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন ছিলো। তাছাড়া শৃঙ্খলা রক্ষায় রোভার ও স্কাউট সদস্যরা নিষ্ঠার সহিত সার্বক্ষণিক কাজ করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ একুশে ফেব্রুয়ারি তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর্যের সঙ্গে পালনে বিভিন্ন কর্মসূচী ঘোষনা করেন। সে অনুযায়ী রাত ১২টা ১মিনিটে সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজ মাঠের শহীদ বেদীতে পুষ্পাঞ্জলী অর্পনের মাধ্যদিয়ে দিবসের কর্মসূচী পালন শুরু হয়। তারপর এক মিনিট নিরবতা পালন শেষে দেশ ও জাতীর মঙ্গলার্থে উপস্থিতিদের শপথ পাঠ করানো হয়। তাছাড়া শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় উপস্থিত সকলকে সাথে নিয়ে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
২১ ফেব্রুয়ারি রবিবার ভোরে নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ সংগঠনের সকল শাখা কার্যালয়সহ সরকরি বেসরকারি সকল অফিসে সঠিক নিয়মে সঠিক রং ও মাপের জাতীয় পতাকা উত্তোলনপূর্বক অর্ধনমিত রাখা, কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রভাত ফেরিতে অংশ গ্রহণ করা, চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, ভাষা শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ প্রার্থনা, কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিল এবং আলোচনা সভা মতো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে।