“জননীর কাছে সবার আছে জন্ম ঋণ, জরায়ুমুখের ক্যান্সার সচেতনতায় অংশ নিন”-এই শ্লোগানে শেরপুর জেলার সদর উপজেলায় সচেতনতা মূলক পদযাত্রা ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। ২৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ, শেরপুর জেলা শাখার উদ্যোগে “জননীর জন্য পদযাত্রা” শিরোনামে জনসচেতনতা মূলক শোভাযাত্রা, সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা ও জরায়ুমুখের ক্যান্সার বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে সর্বসাধারনের মাঝে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি নাঈমুর রহমান তালুকদারের নেতৃত্বে শেরপুর ডায়াবেটিস হাসপাতাল গেইট থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেরপুর সদর হাসপাতালে গিয়ে শেষ হয়। পদযাত্রার অগ্রভাগে শেরপুর ডায়াবেটিস হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সমাজকর্মী শেরপুরের মাদার তেরেসা হিসেবে খ্যাত রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনি অনকোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাবেরা খাতুন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোবারক হোসেন, ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ, শেরপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি মো. আজমল হোসেন, মানবাধিকার কর্মী মোছা. তাহমিনা জলি, সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার হোসেন শিশির, সদস্য মশিউর রহমান সজিব তালুকদার, সুহেল রানা ও কাব্য আহম্মেদসহ শেরপুর ডায়াবেটিস হাসপাতালের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ শেরপুর জেলা শাখার অন্যান্য নেতৃবৃন্দসহ অর্ধ শতাধিক ভলান্টিয়ার ও স্থানীয় সাংবাদিকসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
জননীর জন্য পদযাত্রা শিরোনামের এই শোভাযাত্রাটির কার্যক্রম ভার্চুয়াল মাধ্যমে সার্বক্ষণিক তদারকি করেন জননীর জন্য পদযাত্রার প্রধান সমন্বয়কারী ও জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটের ক্যান্সার ইপিডেমিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন।
পদযাত্রার পরে ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি নাঈমুর রহমান তালুকদারের সঞ্চালনায় এক সক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাছাড়া “নিজে সচেতন হোন, অন্যকে সচেতন করুন” এ শ্লোগানে জননীর জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে এ সংগঠনের উদ্যোগে উপস্থিত সকলের মাঝে সচেতনতা মূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়।
বিভিন্ন পরিসংখানে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সারা বিশ্বে প্রতি বছরের জানুয়ারি মাসকে জরায়ুমুখ ক্যান্সার সচেতনতার মাস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। জরায়ু মুখ ক্যান্সার নারীদের জন্য এক ভয়াাবহ মরণব্যাধি। উন্নয়নশীল দেশের মহিলাদের মাঝে যেসব ক্যান্সার অধিক পরিমাণে দেখা যায়, তার মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের অবস্থান দ্বিতীয়। পরিসংখানে আরও জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর জরায়ুমুখ ক্যান্সারে ৬ হাজারেরও বেশি নারী মৃত্যুবরণ করেন এবং প্রতিবছর ১২ হাজারেরও বেশি নারী এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় অর্ধকোটি নারী নতুন করে আক্রান্ত হন। আর জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে প্রতি ২ মিনিটে একজন করে নারী মৃত্যুবরণ করেন বলে ওই পরিসংখানে উল্লেখ্য করা হয়েছে। তাই এ রোগের প্রতিরোধ, প্রতিকার, এর লক্ষণ, আক্রান্ত হওয়ার কারন ও চিকিৎসা বিষয়ে সাধারণ জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই বলে অনেকে মনে করেন।