শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় পৌরসভা নির্বাচনের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় এক মেয়র ও ২ কাউন্সিলর প্রার্থীকে মোট ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। ২৫ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান-এর নেতৃত্বে পৌর এলাকার আলাদা আলাদা স্থানে ৩টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়।
সোমবার সন্ধ্যায় পৌরসভা নির্বাচন আচরণ বিধিমালা ২০১৫-এর ১১(২) লঙ্ঘন করে শো-ডাউন করার দায়ে অনুষ্ঠেয় পৌরসভা নির্বাচনে নারিকেল গাছ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব অধ্যাপক মিজানুর রহমানকে ৫ হাজার টাকা এবং নির্বাচন আচরণ বিধিমালা ২০১৫-এর ১১(২) লঙ্ঘন করে রঙিন বড় ব্যানার প্রদর্শন করায় ২ নং ওয়ার্ডের বোতল প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. জরিপ হোসেনকে ৩ হাজার টাকা ও সরকারি-বেসরকারি ভবনের দেওয়ালে পোস্টার লাগানোর কারনে ৬নং ওয়ার্ডের বোতল প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. জিয়াউল হক (ফরিদ)-কে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুর রহমান এ অর্থদন্ডাদেশ প্রদান করেন। এসময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আহাম্মেদ, নকলা থানার এসআই হাসানুজ্জামানসহ পুলিশ বিভাগের বেশ কয়েকজন সদস্য, উপজেলা ভূমি অফিসের সার্টিফিকেট পেশকার রাশেদুল কিবরিয়া রাশেদসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী, উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগন ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্র জানা গেছে, মেয়র প্রার্থী মিজানুর রহমানের সমর্থকরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে জনসমাগম সৃষ্টি করেন এবং বিশাল শো-ডাউন করেন। এতে পৌরসভা নির্বাচনের আচরণ বিধি লঙ্ঘন হওয়ায় তাকে জরিমানা করা হয়েছে। তাছাড়া রঙিন বড় ব্যানার প্রদর্শন করায় কাউন্সিলর প্রার্থী মো. জরিপ হোসেনকে এবং সরকারি-বেসরকারি ভবনের ফটক ও দেওয়ালে পোস্টার লাগানোর কারনে জিয়াউল হক (ফরিদ)-কে জরিমানা করা হয়।
গত নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত বর্তমান কাউন্সিলর ও অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে ২ নং ওয়ার্ডের বোতল প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. জরিপ হোসেন এবিষয়ে জানান, তাঁর উৎসুক কর্মী-সমর্থকরা স্বপ্রণোদিত হয়ে ২টি রঙিন বড় ব্যানার বানিয়ে একই জায়গায় তা প্রদর্শন করেন। এতে পৌরসভা নির্বাচনের আচরণ বিধি লঙ্ঘন হয়। কর্মী-সমর্থকরা রঙিন বড় ব্যানারের মাধ্যমে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি সম্পর্কে না জানার কারনে এমনটা করেছে বলে জরিপ মনে করেন। তিনি বলেন- আমার প্রিয় কর্মী-সমর্থকরা রঙিন বড় ব্যানার বানিয়ে তা প্রদর্শন করায় পৌরসভা নির্বাচনের আচরণ বিধি লঙ্ঘন হওয়ায় আমি স্বেচ্ছায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত জরিমানা নিজে হাতে পরিশোধ করেছি।
নির্বাচন নিকটে চলে আসায় প্রার্থীরা বা প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে পারেন, তাই পৌর সভার বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী আচারণ বিধি মানা হচ্ছে কিনা তা তদারকি করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুর রহমান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আহাম্মেদের নেতৃত্বে প্রায়শই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুর রহমান বলেন, নির্বাচনী আচারণ বিধি লঙ্ঘন করলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। নির্বাচন পরিচালনা ও সুষ্ঠু ভাবে সমাপ্ত করার লক্ষে এ নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।