শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুর রহমানের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেলো স্কুল পড়ুয়া ১০ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী, তবে জন্ম সনদ অনুযায়ী আজকে পর্যন্ত তার বয়স হয়েছে ১৫ বছর ১০ মাস ১৬ দিন। সে পাঠাকাটা ইউনিয়নের কৈয়াকুড়ী কান্দাপাড়া এলাকার হারুন-অর-রশিদের মেয়ে এবং কৈয়াকুড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী।
জানা গেছে, ১৭ জানুয়ারি রবিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুর রহমান গোপন সূত্রে জানেন যে, শেরপুর সদর উপজেলার ঝগড়ারচর এলকার এক ছেলের সাথে কৈয়াকুড়ী কান্দাপাড়া এলাকার স্কুল পড়ুয়া অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক শিক্ষার্থীর বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। এ সংবাদ জানার পরে তাৎক্ষণিক পাঠাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ফয়েজ মিল্লাতকে বিয়ের আয়োজন বন্ধ করার নির্দেশ প্রদান করেন তিনি। পরে কনের বাড়িতে বরপক্ষ পৌঁছার আগেই ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশক্রমে পাঠাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্টদের তৎপরতায় এ বিবাহের আয়োজন পণ্ড করে দেওয়া হয় এবং মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবেন না মর্মে কনের পরিবারের অভিভাবকদের কাছে লিখিত মুচলেকা নেওয়া হয়।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ফয়েজ মিল্লাত বিশেষ কাজে এলাকায় না থাকায় ইউএনও মহোদয়ের বরাত দিয়ে তাঁর ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত ইউপি সচিব, ইউপি সদস্য, উদ্যোক্তা, দফেদার, গ্রাম পুলিশ ও এলাকার গন্যমান্যদের বাল্যবিবাহটি বন্ধ করে দিতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পাঠাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্দেশে ইউপি সচিব জাহিদ নেওয়াজ, ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হোসেন ও মাফিদুল ইসলাম, স্থানীয় গন্যমান্যদের মধ্যে আদাম্মদ আলী মাস্টার, মো. নওশের আলী, মো. সুবেদ আলী, মো. রফিজ উদ্দিন, রবি মিয়া, দফেদার শরাফত আলী, গ্রাম পুলিশ ফরিদ উদ্দিন ও শহিদুল ইসলামসহ এলাকার গন্যমান্যদের অনেকে উপস্থিত থেকে এ বাল্যবিবাহ বন্ধ করেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তথা ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে এ বিবাহের বিষয়টি মাঝে মধ্যে তদারকি করতে ইউএনও জাহিদুর রহমান তাকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান পাঠাকাটা ইউপির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ফয়েজ মিল্লাত। ইউএনও জাহিদুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখে নকলাকে জেলার প্রথম বাল্যবিবাহ মুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অতএব, এ উপজেলায় একটি বাল্যবিবাহ কারও কাম্য নয়। নকলা উপজেলায় বাল্যবিবাহের কোন ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট পরিবারের অভিভাবক, বর, আয়োজক ও কাজীদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। এক্ষেত্রে আইনি ভাবে কোন প্রকার আপোষ নেই। বাল্যবিবাহ নিরোধ ও বন্ধে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগসহ বাল্যবিবাহ নিরোধ কমিটির সংশ্লিষ্টরা সদা তৎপর রয়েছেন বলে জানান তিনি।