শেরপুর জেলার নকলায় উপজেলায় বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ও আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ১০ জানুয়ারি রবিবার বঙ্গবন্ধু চত্বরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিকাল সাড়ে ৩টায় আলোচনা সভা শুরু হয়ে রাত ৮ টা পর্যন্ত এ সভা চলে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আম্বিয়া খাতুনের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উরফা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল হক হীরার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় মূখ্য আলোচক হিসেবে বঙ্গবন্ধু’র স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও চৌধুরী ছবরুন নেছা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক, সহ-সভাপতি ফেরদৌসুর রহমান জুয়েল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নকলা পৌরসভার মেয়র হাফিজুর রহমান লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান সোজা, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও বানেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বত, দপ্তর সম্পাদক খলিলুর রহমান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান উম্মে কুলসুম রেনু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ.কে.এম মাহবুবুল আলম সোহাগ, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. মজিবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বিদুৎ, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল সূত্র ধর, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম সোহেল, যুগ্ম আহ্বায়ক এফ.এম কামরুল আলম রঞ্জু ও রেজাউল করিম রিপন, গৌড়দ্বার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন খান মুকুল প্রমুখ।
আলোচনা সভার মূখ্য আলোচক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরে বলেন, ১০ জানুয়ারি বাঙালি জাতির এক ঐতিহাসিক দিন। ১৯৭২ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে রক্তস্নাত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন। মহান এই নেতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়েই বিশ্বজুড়ে বাঙালি জাতি পরিচিতি পায় বীর বাঙালি হিসেবে। বাঙালির বিজয় তথা স্বাধীনতাসংগ্রামের বিজয় পরি পূর্ণতা পায় যেন ঠিক এ দিনেই। স্বয়ং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর নিজের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তথ্যমতে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদাররা বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি করে রাখে। সমগ্র দেশের নিরস্ত্র বাঙালি যখন স্বাধীনতার জন্য প্রানপন যুদ্ধ করছেন, তখন পাকিস্তানের কারাগারে প্রহসনের বিচারের রায়ে ফাঁসির আসামি হিসেবে মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন বীর বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অবশেষে ১৯৭১ সালেরর ১৬ ডিসেম্বর বাঙালির চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হওয়ার পর বিশ্বনেতারা স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। আন্তর্জাতিক চাপে পরাজিত পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত তাদের বন্দিদশা থেকে বঙ্গবন্ধুকে সসম্মানে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ২৯০ দিন পাকিস্তানের কারাগারে কাটানোর পর লন্ডন ও দিল্লি হয়ে বঙ্গবন্ধু ঢাকায় পৌঁছেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। এরপর থেকে প্রতিবছর কৃতজ্ঞ ও বীর বাঙালি জাতি বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে আসছেন।
তাছাড়া আলোচনা সভার অধিকাংশ বক্তারা তাদের বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহবান জানান। বক্তারা বলেন- স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশকে সত্যিকারের সোনার বাংলাদেশ গড়তে তাঁরই সুযোগ্য তনয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার দক্ষনেতৃত্বের কারনেই আমার দ্রুত উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্ব দরবারে মডেলে পরিণত হয়েছি। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন ও জনগনের জীবনমানের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের কোন বিকল্প নেই বলে তাঁরা সুস্পষ্ট মন্তব্য করেন। সকল বক্তারা তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিসালী করতে সকলের প্রতি আহবান জানান। তাদের আহবানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ জানুয়ারি শনিবার নকলা পৌরসভার নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী বর্তমান মেয়র হাফিজুর রহমান লিটনের জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।
এসময় উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, ছাত্র লীগ ও অন্যান্য অঙ্গসহযোগী সংগঠনের অগণিত নেতা-কর্মী, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ আওয়ামী লীগের তথা নৌকা প্রেমী সাধারন জনগন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ৮ টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহর নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।