শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস যতাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ১০ জানুয়ারি উপজেলার বানেশ্বরদী ইউনিয়নের ঐতিহাসিক বানেশ্বরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে সরকারি নির্দেশনা মোতাবকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
মাদ্রাসার সুপার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ নকলা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহকারী শিক্ষক মো. মোশারফ হোসাইন, সহকারী শিক্ষক মোসাম্মৎ রোকেয়া আক্তার, মাহবুব হোসাইন রূপম ও নুসরাত জাহান নীপা; সহকারী মৌলভী মাওলানা মো. রেজাউল করিম ও মাওলানা মো. ফজলুল করিম; ক্বারী শিক্ষক কাজীমদ্দিন, ইবতেদায়ী শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান ও মো. কব্দুল হোসেন প্রমুখ। এসময় ঐতিহাসিক বানেশ্বরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন- ১০ জানুয়ারি বাঙালি জাতির এক ঐতিহাসিক দিন। ১৯৭২ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে রক্তস্নাত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন। মহান এই নেতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়েই বিশ্বজুড়ে বাঙালি জাতি পরিচিতি পায় বীর বাঙালি হিসেবে। বাঙালির বিজয় তথা স্বাধীনতাসংগ্রামের বিজয় পরি পূর্ণতা পায় যেন ঠিক এ দিনেই। স্বয়ং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর নিজের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
তথ্যমতে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদাররা বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি করে রাখে। সমগ্র দেশের নিরস্ত্র বাঙালি যখন স্বাধীনতার জন্য প্রানপন যুদ্ধ করছেন, তখন পাকিস্তানের কারাগারে প্রহসনের বিচারের রায়ে ফাঁসির আসামি হিসেবে মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অবশেষে ১৯৭১ সালেরর ১৬ ডিসেম্বর বাঙালির চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হওয়ার পর বিশ্বনেতারা স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। আন্তর্জাতিক চাপে পরাজিত পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত তাদের বন্দিদশা থেকে বঙ্গবন্ধুকে সসম্মানে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ২৯০ দিন পাকিস্তানের কারাগারে কাটানোর পর লন্ডন ও দিল্লি হয়ে বঙ্গবন্ধু ঢাকায় পৌঁছেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। এরপর থেকে প্রতিবছর কৃতজ্ঞ ও বীর বাঙালি জাতি নানা আয়োজনে পালন করে আসছে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস।