নিজস্ব প্রতিবেদক:
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী চতুর্থ ধাপে দেশের ৫৬টি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ঘোষিত এ ৫৬টি পৌরসভার মধ্যে শেরপুর জেলার শেরপুর সদর পৌরসভা ও শ্রীবরদী পৌরসভা রয়েছে। এই ৫৬টি পৌরসভার মধ্যে ৩১টি পৌরসভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এর মাধ্যমে এবং ২৫টি পৌরসভার নির্বাচন ব্যালট পেপারের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
চতুর্থ ধাপের পৌরসভা নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী শেরপুর জেলার শেরপুর সদর পৌরসভা ও শ্রীবরদী পৌরসভাসহ দেশের ৫৬টি পৌরসভা নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৭ জানুয়ারি রবিবার, ১৯ জানুয়ারি মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র বাছাই, প্রর্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকাল ৮ টা থেকে বিরতিহীন ভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে শেরপুর জেলার শেরপুর সদর ও শ্রীবরদী পৌরসভায় আওয়ামী লীগের দলীয় মেয়র মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর অংশ হিসেবে ৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার শেরপুর সদর পৌরসভা ও শ্রীবরদী পৌরসভায় আওয়ামী লীগের তৃণমূলের ভোট গ্রহন করে নেতৃবৃন্দের সমর্থন যাচাই করা হয়।
শেরপুর পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সম্ভাব্য ৪ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে নৌকার প্রার্থী মনোনয়নে তৃণমূলের সমর্থ পেতে ৩ জন তৃণমূলের ভোটে অংশ নেয়। ১০৯ ভোটারের মধ্যে ১০৩ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে আনিসুর রহমান আনিস ৪৮ ভোট পেয়ে তৃণমূলের মনোনিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী আনোয়ারুল হাসান উৎপল পেয়েছেন ৩৩ ভোট ও বর্তমান মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন পেয়েছেন ২১ ভোট; আর একটি ভোট নষ্ট হিসেবে গন্য হয়। এদিকে দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে তৃণমূলের ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে! এমন অভিযোগ এনে জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার তৃণমূলের ভোট প্রত্যাখ্যান করে তৃণমূলের এ ভোটে বা নির্বাচনে অংশ নেয়নি।
জেলার শ্রীবরদী পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সম্ভাব্য ৭ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে নৌকার প্রার্থী মনোনয়নে তৃণমূলের সমর্থ পেতে ৫ জন প্রার্থী তৃণমূলের ভোটে অংশ নেয়। এখানে ১৩৪ ভোটারের মধ্যে ১২৩ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে সফিকুল ইসলাম সফিক ৫৬ ভোট পেয়ে তৃণমূলের মনোনিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী অ্যাডভোকেট মেরাজ উদ্দিন চৌধুরী পেয়েছেন ২৭ ভোট, তাছাড়া অপর প্রার্থীদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী লাল পেয়েছেন ২০ ভোট, আলমগীর হোসেন পেয়েছেন ১০ ভোট, অ্যাডভোকেট শাহীদ উল্লাহ শাহী পেয়েছেন ৭ ভোট। এদিকে দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনার প্রতি সম্মান রেখে তৃণমূলের ভোটে অংশ গ্রহন না করেও জুয়েল আকন্দ পেয়েছেন ৩ ভোট এবং অপর সম্ভাব্য প্রার্থী আমিনুল ইসলাম টাইগার তৃণমূলের ভোট বা নির্বাচনে অংশ নেয়নি।
তৃণমূলের তথা জেলা-উপজেলার প্রস্তাবিত তালিকার ক্রমিকের ওপর বিবেচনা না করে, প্রয়োজনে এনএসআই ও ডিজিএফআইসহ বিভিন্ন সংস্থার জনসমর্থন মূলক রিপোর্টের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দিতে পারলে ফলাফল অধিক ভালো হবে বলে অনেকে মনে করছেন। বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনে জেলা-উপজেলা কর্তৃক প্রেরিত তালিকার ক্রমিকের ওপর বিবেচনা না করে, প্রয়োজনে তালিকা বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের নিবেদিত ও পরিক্ষীত অন্য কাউকে দলীয় (নৌকা প্রতীক) মনোনয়ন দিলেও নির্বাচনে কোন প্রকার প্রভাব পড়বে না, বরং দলের জন্য ভালো হতে পারে বলে স্থানীয় অনেক ভোটাররা জানান।
বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দলের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে সর্বোচ্চ যাচাই বাচাই করেই দলীয় (নৌকা প্রতীকের) মনোনয়ন দিবেন বলে প্রতিটি পৌরবাসীর দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে; এমনটাই জানান আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী ও সমর্থকবৃন্দ। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দলের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে সর্বোচ্চ যাচাই বাচাই করেই দলীয় মনোনয়ন দেন, এর বাস্তব প্রমাণ জেলার নালিতাবাড়ী পৌরসভা নির্বাচনে জেলা-উপজেলার প্রস্তাবিত তালিকার ক্রমিকের ওপর বিবেচনা না করে বর্তমান মেয়র আবু বক্করকে দলীয় (নৌকা প্রতীকের) মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যদিও নকলা পৌরসভা নির্বাচনে প্রস্তাবিত তালিকার ক্রমিকের এক নম্বর তালিকাভূক্ত বর্তমান মেয়র হাফিজুর রহমান লিটনকে দলীয় (নৌকা প্রতীকের) মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।