শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় ‘ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত সমাজ বির্নিমাণে, সেবা ও সুযোগ প্রান্ত জনে’ এই প্রতিপাদ্যকে ধারন করে এবং ‘মুজিববর্ষের চেতনায়, সমাজসেবা দোরগোড়ায়’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২ জানুয়ারি শনিবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও ইউনিয়ন সমাজকর্মী মো. ছাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. বোরহান উদ্দিন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আহাম্মেদ, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সারোয়ার আলম তালুকদার ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছা. ফরিদা ইয়াসমিন। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে হাবিবে জান্নাত মহিলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মো. মনিরুজ্জামান, নকলা অটিজম স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আক্রাম হোসেনসহ অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও এতিম খানার সভাপতি ও পরিচালকগন বক্তব্য রাখেন।
এসময় নকলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার জসিম উদ্দিন মিন্টু, নকলা ইয়্যুথ রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি নূর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন শ্যামল, নকলা প্রবীণ ও প্রতিবন্ধী হিতৈষী সংস্থার সভাপতি আসাদুজ্জামান সৌরভ, ইউনিয়ন সমাজ কর্মী ফাতেম খাতুন, মোফাখখারুল ইসলাম ও মো. বিল্লাল হোসেনসহ স্থানীয় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, উপজেলার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও এতিম খানার সভাপতি ও পরিচালকগন, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সুশীলজন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমান সরকারের সুদৃষ্টির ফলেই শতভাগ ভাতা ভোগীর আওতায় দেশের হাতেগুনা কয়েকটি উপজেলার মধ্যে নকলা উপজেলাকে নির্বাচিত করায় গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহামনের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বক্তারা। তাঁরা জানান, সমাজ সেবা এমই এক দপ্তর, যে দপ্তরের সাথে দেশের সর্ব নিন্ম আয়ের লোকজন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ স্তরের লোকজনের সাথে জীবনমান উন্নয়নে সুসম্পর্ক রয়েছে। সরকারের নির্দেশে এ সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে দেশের সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ দরিদ্র-অসহায়, নির্যাতিত-নিপিড়িত, প্রতিবন্ধী, বিধবা, বয়স্ক, গর্ভবতী মায়েরা পাচ্ছেন ভাতা। ভাতা দেওয়া হচ্ছে পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষর্থীসহ হাজারো সুবিধা ভোগীদের। শতভাগ ভাতাভোগের আওতায় নকলা উপজেলার ভাতা পাওয়ার উপযোগী একটি লোকও যেন ভাতা পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হন, সেদিকে সংশ্লিষ্ঠদের সুদৃষ্টি কামনা করেন তাঁরা। ভাতাভোগী খোঁজে বেড়করার ক্ষেত্রে সমাজসেবা অফিস চাইলে উপজেলার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তা নিতে পারেন বলে অনেকে মতামত পেশ করেন।
উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো. আলমগীর হোসেন জানান, উপজেলার সমাজ সেবার কর্মসূচির সমূহের মধ্যে- ভাতার আওতায় ১০ হাজার ৩৭০ জন বয়স্ক নর-নারী, ৫ হাজার ৮৮৩ জন বিধবা নারী, বিভিন্ন ভাবে প্রতিবন্ধী ২ হাজার ৬৮২ জন, দলিত হরিজন বয়স্ক ৫৮ জন, সাধারণ প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি ২৭০ জন, দলিত শিক্ষা উপবৃত্তি ৪১ জনকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া নকলা উপজেলা সমাজ সেবার আওতায় ৩২৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাতা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২৩২ জন ও ২০ জন ওস্তাদকে ভাতার আওতা ভুক্ত করা হয়েছে। উপজেলা সমাজসেবার মাধ্যমে এপর্যন্ত ৩ হাজার ৪০০ জনকে প্রতিবন্ধী সনদ দেওয়া হয়েছে। উপজেলায় নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে ১২৫টি, নিবন্ধিত বেসরকারি এতিম খানার ১১২জন ছাড়াও হাসপাতালে সমাজসেবা কর্মসূচির আওতায় রোগী কল্যান সমিতির মাধ্যমে অবহেলিত, দুঃস্থ, অসহায় মানুষের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা হচ্ছে। ক্ষুদ্রঋন কর্মসূচির আওতায় ৫টি সমিতির ৯৯৪জন সুবিধাভোগী রয়েছে। তাছাড়া সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্যান্য কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে এ সমাজসেবা অফিস।